প্রথম পর্ব লিংক এর পর…
মেসের স্টিলের গেটে আঙুলের উল্টো পিঠ দিয়ে নক করে যাচ্ছে সমুদ্র। কয়েকবার নক করার পর ভেতর থেকে দাড়োয়ানের কন্ঠ শুনা গেলো।
জলিলঃ কে ?
সমুদ্রঃ জলিল ভাই আমি আমি সমুদ্র। গেটটা একটু খুলেন।
ভেতর থেকে আর কোন শব্দ শোনা গেলো না।
ঘুম জড়ানো চেহারায় এসে গেট খুললো দারোয়ান জলিল মিয়া।
তার গায়ে সেন্টো গেঞ্জি আর পরনে লুঙ্গি।
এক হাত দিয়ে অন্য হাতের বাহু চুলকাতে চুলকাতে…
জলিলঃ কিরে ভাই ! আপনাগো যন্ত্রনায় কি রাইতেও একটু ঘুমাইতেও পারমু না ?
সমুদ্রঃ সরি ভাই আজকে একটু লেট হয়ে গ্যাছে!
জলিলঃ শুধু আপনি বইলা গেটটা খুললাম! আরে ভাই প্রতিদিন কেউ না কেউ লেট করে আসে। সারাদিন কাম করি, আবার ফজরের সময় উডন লাগে। আমি ঘুমাইডা কহন কনতো?
সমুদ্রঃ সরি ভাই! আমি বুঝতে পারছি!!
জলিলঃ ঢুকেন, ভিত্রে ঢুকেন…
সমুদ্র ঢুকতেই গেট বন্ধ করে দিল দারোয়ান।।
🔸🔸🔸
সমুদ্রের বিছানার পাশের জানালা খোলা।
গুড়ুম-গাড়ুম শব্দে ঘুম ভাঙতেই বিছানায় উঠে বসল। আড়মোড়া দিতে শব্দের উৎসে হালকা ব্যথার সাথে কিঞ্চিত জরুরী প্রক্ষালন কক্ষ মানে টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করল। বিছানা ছেড়ে দ্রুত উঠে লুঙ্গি ঠিক করতে করতে দরজা খুলেই দেখল ওয়াশ রুমের সামনে ৫/৬ জনের সু-দীর্ঘ লাইন!
কেউ দাত ব্রাশ করছে, কেউ হাই তুলছে, কেউ আবার দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে মোবাইল টিপছে।
এই দৃশ্য দেখে টয়লেটের দ্বিগুন বেগ অনুভব করলো সমুদ্র। পেট চেপে ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো গতি নেই! লাইনের মধ্য থেকে ব্যাপারটা খেয়াল করল ইব্রাহিম।
ইব্রাহিমঃ কী ভাই, খুব চাপ নাকি?
চেহারায় অসহায়ত্বের ভাব নিয়ে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো সমুদ্র।
ইব্রাহিমঃ ঐ জনি ভাই, জলদি বের হন। হিসেব পরে কইরেন। (ভেতরের জনকে তাড়া দিলো)
এরপর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কামালকে উদ্দেশ্য করে শান্ত গলায় বললো…
ইব্রাহিমঃ কামাল ভাই একটু পড়ে ঢুকেন, সমুদ্র ভাই আগে যাক।
এমন সময় জনি বের হতেই সমুদ্রকে উদ্দেশ্য করে কামাল…
কামালঃ ভাই আসেন।
সমুদ্র কালক্ষেপণ না করে দ্রুত ভিতরে ঢুকেই আবার বের হয়ে এলো!
কামালঃ কী ভাই, কোন সমস্যা?
সমুদ্রঃ গত মাসে পানির বিল কত আসছে?
ইব্রাহিমঃ কেন ভাই কী হইছে ?
এবার একটু চেঁচিয়ে উঠলো সমুদ্র!
সমুদ্রঃ একটু বেশি কইরা পানি ঢাললে কী হয় তোমাগো? যেইডা নিচ দিয়া বাইর হওয়ার কথা ঐটা উপর দিয়া বাইর হইয়া আসতেছে…
বলেই বমি আটকাতে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে একবার টয়লেটের দিকে আবার ঘুরে রুমে চলে যায়। বাকিরা সবাই তাকিয়ে থাকে।
রুমে ঢুকে লুঙ্গি পালটে প্যান্ট এবং একটা টি-শার্ট পরে মোবাইল আর মানিব্যাগ নিয়ে হনহনিয়ে বের হয়ে চলে যায় সমুদ্র।
সবাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।।
গেটের সামনে রাস্তায় বের হয়ে চিন্তা করছে সমুদ্র।
"এই অবস্থায় কোথায় যাই! মসজিদের টয়লেটে!! না না; আচ্ছা হিমেলদের বাসায়তো ভাড়াটিয়া থাকে না, ওকেই একটা ফোন দেই"
পকেট থেকে ফোন বের করে কল করলো হিমেলকে..
উপুর হয়ে ঘুমিয়ে থাকা হিমেল মাথা না তুলেই আশপাশ থেকে খুঁজে বের করলো বাজতে থাকা মোবাইল ফোনটা।
হিমেলঃ হ্যালো…
সমুদ্রঃ কিরে, এখনো ঘুমাচ্ছিস!
হিমেলঃ হুম।
সমুদ্রঃ আচ্ছা, শোন। তোদের গেটটা একটু খোলতো !
হিমেলঃ ক্যান ভাই! এতো সকাল সকাল কী হইছে বলেন তো ?
সমুদ্রঃ আরে খোল না! দরকার আছে।
হিমেলঃ আপনি এখন কই ?
সমুদ্রঃ তোদের গেটের সামনে! মানে ২মিনিট লাগবে আরকী!! তুই খোলতো!!!
হিমেলঃ আচ্ছা আসেন।
লাইন কেটে ফোনে সময় দেখলো হিমেল।
৭টা বেজে ৪০ মিনিট। মুখে বিরক্তি এনে ফোন সাইলেন্ট করে পাশে রেখে আবার ঘুমিয়ে পড়ল।
সমুদ্র হিমেলদের গেটে এসে কলিং বেল দিতে গিয়েও দিল না। কল করলো হিমেলকে।
ওদিকে হা করে বিভোরে ঘুমাচ্ছে হিমেল।
পাশে রাখা ফোনের ডিসপ্লেতে “incoming call” ভাসছে।
চোখ-মুখ এক করে কান থেকে ফোন নামালো সমুদ্র… “শিট ! আবারো ঘুমাইয়া পড়ছে”
আপনমনে কী যেন ভাবলো সমুদ্র ; তারপর ফোন টিপতে টিপতে হাঁটা শুরু…
@চলবে…
Pingback: নিয়তি (প্রথম পর্ব) [] ডি এম মনির | bioscope24.tv
Pingback: নিয়তি (তৃতীয় পর্ব)।। ডি.এম মনির | bioscope24.tv
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.
আগামীকাল চাঁদপুরের ৫০ গ্রামে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি করবেন ( ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মিজান শোক প্রকাশ করেন (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, অধ্যাপক ডা.উত্তম কুমার বড়ুয়ার শোক প্রকাশ (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, ডাঃ আবু রায়হান শোক প্রকাশ করেন (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, রোটারিয়ান মোঃ মোমেন সরকারের শোক প্রকাশ (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মতিউর রহমান মিয়া চাঁনের শোক প্রকাশ (ভিডিও সহ)
2020 Powered By bioscope24.tv II Design by DATFU