করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষাবিদ নিলুফার মঞ্জুর মঙ্গলবার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন।
নিলুফার মঞ্জুর দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী। প্রখ্যাত এই শিক্ষকের মৃত্যুতে দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে।
দেশ-বিদেশে তার হাজার হাজার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী রয়েছেন। প্রিয় শিক্ষকের মৃত্যুতে সামাজিকমাধ্যমে তারা শোক প্রকাশ করেছেন।
সানবিমস স্কুল সূত্র জানায়, নিলুফার মঞ্জুরের নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা গেলে কয়েক দিন আগে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর পরীক্ষা করলে করোনা ধরা পড়ে। একই পরীক্ষা করা হয় সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর। তারও করোনা ধরা পড়ে।
নিলুফার মঞ্জুর ১৯৭৪ সালে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সানবিমস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। দেশ-বিদেশে এই স্কুলের হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। অধ্যক্ষ নিলুফার মূলত একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলেন।
সানবিমস স্কুলের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবদুল কাদের জানান, নিলুফার মঞ্জুরকে প্লাজমা থেরাপি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ও নিলুফার মঞ্জুর দম্পতির দুই সন্তান। ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মেয়ে মুনিজ মঞ্জুর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
সত্যিকার অর্থে নিলুফার মঞ্জুর ছিলেন একজন জাতি গঠনকারী নারী। তার পরিবারের সদস্যরাও নিজ নিজ জায়গা থেকে দেশে ব্যাপক অবদান রেখে আসছেন। যে কারণে মানুষের কাছে তাদের সবাই শ্রদ্ধার পাত্র হয়েছে আছেন।
তার বাবা, স্বামী ও সন্তানেরা— সবাই দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছেন। আর শিক্ষার্থীদের হৃদয়ের কোণে নিলুফার মঞ্জুরের জায়গা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা।
খ্যাতির প্রতি তিনি আকাঙ্ক্ষা কিংবা মুখিয়ে থাকতেন, এমন কিছু না। তিনি ছিলেন অধ্যাবসায়ী, ধৈর্যশীল, বিনয়ী ও অনুপ্রেরণার উৎস।
নারী ক্ষমতায়নের অন্যতম উদাহরণ ছিলেন এই শিক্ষাবিদ। মানুষ গড়ার ক্ষেত্রে তার অনাবদ্য ভূমিকা গল্পের মতো হয়ে আছে। ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিপর্যস্ত দেশে ১৯৭৩ সালে দুই সন্তান নাসিম ও মুনিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। একজন শিক্ষক হিসেবে নিজের দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়তে চেয়েছিলেন তিনি।
কাজেই বন্ধুদের উৎসাহ ও স্বামীর অনুপ্রেরণায় শিক্ষার জগতেই তিনি পা রাখেন। অনিশ্চয়তায় ডুবে যাওয়ার চেয়ে এটা ছিল তার আশান্বীত হওয়ার মতোই পদক্ষেপ। জনতা ব্যাংক থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তিনি প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেন। ১০টি টেবিল ও কয়েকটি বেঞ্চ কিনতে ওই টাকা তিনি বিনিয়োগ করেন। লাল রং দিয়ে সেগুলো রঙিন করেন। লাল মানে সমৃদ্ধি।
১৯৭৪ সালের ১৫ জানুয়ারির কথা। ইন্দ্রিরা রোডে নিজের বাড়ির বাইরে ‘সানবিমস’ সাইনবোর্ড দিয়ে তার স্কুলের যাত্রা শুরু করেন। যেটা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রগামী একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
বর্তমানে ধানমণ্ডি ও উত্তরায় এ স্কুলের দুটি শাখায় প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
সানবিমসে ৪৬ বছর ধরে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এভাবে নিলুফার মঞ্জুর ছিলেন শিক্ষা ও আশার বাতিঘর। আট শিক্ষার্থী নিয়ে তিনি স্কুলটি শুরু করেন, যার মধ্যে দুজন ছিল তার সন্তান। আর মৃত্যুর আগে তিনি অসংখ্য শিক্ষার্থী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তিনি শিক্ষার্থীদের সবসময় বিনয়ী হতে বলতেন। আর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত করতেন।
Very Sad News
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.
আগামীকাল চাঁদপুরের ৫০ গ্রামে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি করবেন ( ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মিজান শোক প্রকাশ করেন (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, অধ্যাপক ডা.উত্তম কুমার বড়ুয়ার শোক প্রকাশ (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, ডাঃ আবু রায়হান শোক প্রকাশ করেন (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, রোটারিয়ান মোঃ মোমেন সরকারের শোক প্রকাশ (ভিডিও সহ)
শোকাবহ ১৫ আগস্ট, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মতিউর রহমান মিয়া চাঁনের শোক প্রকাশ (ভিডিও সহ)
2020 Powered By bioscope24.tv II Design by DATFU