কোরবানির মর্মগীতি ।। শুক্লা সৃজন সরকার

নানার কাছে নাতির আবদার

শুনতে চায় কোরবানির মর্মগীতি

কিভাবে হলো নানা আমাদের এই রীতি

নানা হেসে দিয়ে বলে সে বিশাল মর্মবাণী

শুনলে জানতে পারবে আল্লাহর অমোঘ মেহেরবানি।

ইসলামেরই জাতির পিতা হযরতে ইব্রাহিম

সর্বদা আল্লাহর পথে থাকিতো বিলীন।

একদিন আল্লাহকে বলেন ইব্রাহিম

কি করিলে পাইবো দেখা বলুন হে দীন?

নিজের জান কোরবান করতে হবো না পিছু।

আল্লাহ্ তাকে থামাইয়া বলিলেন, শোনো

তোমারই প্রিয়বস্তু আমাতে দানো।

ইব্রাহিম খুশি মনে বাড়ি ফিরে গেল

দিন রাত এক করিয়া ভাবিতে লাগিল।

কি তাহার প্রিয় ধন নিজ জান থেকে

জমি জিরাত,ধন-দৌলত মসনদের চাইতে।

কোন কিছু ভেবে যখন কুল নাহি পান

নিজেকে মনে করেন পাগল প্রমাণ।

এমন সময় পুত্রধন ইসমাইল এলো

পিতার কোলেতে বসে চুম্বন একে দিলো।

ইব্রাহিম চকিত হইয়া কাপিঁয়া উঠিল

পুত্রই তাহার শ্রেষ্ঠ ধন বুঝিতে পারিলো।

বিবিকে বলিল সে আল্লাহর কথা

বিবি তখন হাসিমুখে চাপিলেন ব্যাথা।

কাঁদিলেন বিবি দিলেন না জানিতে

পিছুতে না নবী লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যায় তাতে।

যথারীতি পুত্রের গোসল করাইয়া

নিয়ে গেল নতুন জামা পরাইয়া।

যতই সময় এগোয় লক্ষ্যে পৌছাইবার

ততই পিতার বুক হয় অঙ্গার।

পুত্রধন কি জানি কি বুঝিতে পারিল

কেন পিতা তোমার আঁখি ছলছল।

এ হেন বস্ত্র পরাইয়া কোথা নিয়া যাও

সত্ত্বর তাহা পিতা তুমি আমায় কও।

পিতা তখন আল্লাহর কথা সব বলিল

পুত্র তখন বলিল, দেরী না করিয়া পিতা মোরে নিয়া চলো।

শোনালো অমোঘ কথা পিতাকে পুত্র

আল্লাহর তরে দানিতে জীবন আমি সদা ব্যগ্র।

নিয়ে যাও পিতা আমায় আল্লাহর কাছে

এ মহান জীবন দানে দানিতে আমাকে।

পিতা তখন শেষবার পুত্রকে বুকেতে বাধিলো

পরম এক প্রশান্তি অনুভূত হলো।

যথারীতি নিয়ম মেনে কোরবান দিলো

আল্লাহ্ তখন তার মহিমা দেখাইলো।

পুত্রের বদলে কোরবান দুম্বা হলো

এভাবে আমাদের মাঝে কোরবানি এলো।